/ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ /
২৪খবরবিডি: 'বিদ্যুৎ সংকটের কারণে প্রতিটি দেশ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে 'ডিআরইউ সাহিত্য পুরস্কার ও লেখক সম্মাননা ২০২২' অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। 'হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে, তখন রিজার্ভ ছিল ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন।'
'তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ছিল ৬ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। সেখান থেকে বর্তমান সরকার ৪৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছে। তিনি বলেন, করোনার কারণে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আনা, বিনিয়োগ ও আমদানি বন্ধ ছিল। করোনার পর এগুলো আনা হচ্ছে-আমদানিও বেড়েছে। এ কারণে রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। সাধারণত তিন মাসের রিজার্ভ থাকাই যথেষ্ট, অথচ আমাদের সেখানে ৫ মাসের আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ অর্থ রয়েছে।তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের এক সংকটের কারণে পৃথিবীর প্রতিটি দেশ এখন সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। অর্থাৎ রিজার্ভ ভেঙে খাচ্ছে। টকশোগুলোতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সমস্যার কথা বলা হয়, কিন্তু বিশ্ববাজারের বিদ্যুৎ ও অর্থনীতির সংকটের কথা ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয় না। তিনি বলেন, জার্মানিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও এক মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ যায়নি। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর এখন ঠান্ডা পানি গরমের জন্য বিদ্যুৎ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ঠান্ডার দেশটি তার নাগরিকদের গরম পানির পরিবর্তে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে বলছে। তিনি আরও বলেন, আমরা যেসব দেশকে অনুসরণ করছি, সেসব দেশে এখন লোডশেডিং চলছে। আমেরিকায় নাগরিকদের এসএমএসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে বলা হয়েছে। ইউরোপের প্রত্যেকটি দেশে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে বলা হয়েছে। কয়েকদিন আগের খবরের কাগজে দেখেছি, যুক্তরাজ্যে বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে মানুষ কয়েক বেলা না খেয়ে রয়েছে। বাড়তি জ্বালানির ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশটিতে মানুষের খাবারে টান পড়েছে। সাহিত্য পুরস্কারের উদ্যোগকে চমৎকার উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এই পুরস্কারের মাধ্যমে সাংবাদিকরা উৎসাহিত হবেন। এই পুরস্কার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে শুরু করায় আমি ডিআরইউকে ধন্যবাদ জানাই।'
'তিনি বলেন, আমরা একসময় দরিদ্র ছিলাম, এখন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। তবে মেধা ও মননের দিক দিয়ে আমরা সবসময় সমৃদ্ধ জাতি। ভারতসহ যেখানেই গিয়েছি, সবাই বলে সাহিত্য ও সংগীত চর্চায় আমরা এগিয়ে। আমরা সারা বিশ্বের কাছে এগিয়ে, আমরা সাহিত্যে নিয়ে গর্ব করতে পারি। ডিআরইউ সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ।
'বিদ্যুৎ সংকটে প্রতিটি দেশ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে' : হাছান মাহমুদ
এবার তিন ক্যাটাগরিতে সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন। রাজীব নূর, হাসান হাফিজ ও এম মামুন হোসেন। তিনজনের মধ্যে কথাসাহিত্য (গল্প ও উপন্যাস) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূর। কাব্য (কবিতা/ছড়া) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন হাসান হাফিজ (আমার দেশ)। মননশীল (প্রবন্ধ ও গবেষণা) ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন এম মামুন হোসেন (সময়ের আলো) । 'এই তিনজনের সঙ্গে আরও ৩৬ জন সাংবাদিককে 'লেখক সম্মাননা' দেওয়া হয়েছে। বিজয়ীদের নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।'
যারা সম্মাননা পেয়েছেন-
'কথাসাহিত্য (গল্প/উপন্যাস) : 'হাবিবুল্লাহ ফাহাদ (খৈয়া গোখরার ফণা), প্রণব মজুমদার (তোমাদের গল্প), মাইদুর রহমান রুবেল (ভূতের করোনা পজেটিভ), মুস্তাফিজ শফি (স্পর্শ), আমিরুল মোমেনীন মানিক (আরতুগ্রুল বাঙালি), দীপক চৌধুরী (ভোগ), ইন্দ্রজিৎ সরকার (অথবা অন্য কেউ), জীবন ইসলাম (একাত্তরে শিলারা), আসাদুজ্জামান অংশুমান (জয়ামায়া), শাহীন চৌধুরী (জাফলং থেকে সুন্দরবন) ও হক ফারুক আহমেদ (জলের জমিন)।'
কাব্য (কবিতা/ছড়া) : 'নির্মল চক্রবর্তী (ঈগলের মতো প্রসারিত হাত), আমিরুল মোমেনীন মানিক (ফেরেশতার সুগন্ধি রুমালে আমার আত্মা), রীতা নাহার (চান্দ্রসিক গল্পের রেশ), আব্দুল মান্নান (পরিযায়ী প্রেম ও মুক্তিযুদ্ধ), সাজেদা পারভীন সাজু (অপেক্ষা), মুহাম্মদ আব্দুল বাতেন (রাত্রিকালীন পাখির স্বর) ও আইরিন নিয়াজী মান্না (নির্বাচিত ১০০ ছড়া)।'
মননশীল (প্রবন্ধ ও গবেষণা) : 'আশিস সৈকত (খবরের ভেতরের খবর), মোহাম্মদ আল মাসুম মোল্লা (ভাষান চর), জাকির হোসেন (গণমাধ্যম বিদ্রোহী মার্চ), আবদুল্লাহ জেয়াদ (চলচ্চিত্রের কারিগর আজিজুর রহমান), আবু আলী (শেয়ার বাজারের সহজ পাঠ), পার্থ সনজয় (কান ডায়েরি ওহ বাংলাদেশ), জান্নাতুল বাকেয়া কেকা (বিভূঁইয়ে সাংবাদিকতা), শামসুজ্জামান শামস (বাঙালির ১০ উৎসব), সুমি খান (গণহত্যার ঘাতকেরা সক্রিয়: টার্গেট পিতা মুজিব থেকে ত্রাতা হাসিনা), শামীম আল আমিন (দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ), মোরসালিন আহমেদ (ভারোত্তোলনে বাংলাদেশ), আসাদুজ্জামান সম্রাট (দেশ থেকে দেশে), ইমরান উজ জামান (বাংলাদেশের মেলা পার্বন), মানিক মুনতাসির (মুখোশের আড়ালে মুখোশ), উদিসা ইসলাম (রাষ্ট্রনায়ক), তারিকুল ইসলাম মাসুম (করোনা), আলতাব হোসেন (জলবায়ুর দৃশ্যমান প্রভাব প্রেক্ষিত বাংলাদেশ) ও জি এম ফয়সাল আলম (১৯৭১ অজানা গণহত্যা)।'